
প্রায় ২০০০ মানুষের ওপর এই ট্রায়াল চালানো হয়, যাদের প্রতি সপ্তাহে একবার সেমাগ্লুটাইড নামে এই ওষুধ ইনঞ্জেকশন হিসাবে দেয়া হয় এবং পাশাপাশি খাদ্যাভ্যাস ও শরীর সুস্থ রাখার বিষয়ে তাদের নানা পরামর্শও দেয়া হয়।
পনের মাসের ট্রায়ালে তাদের গড়ে ১৫ কেজি করে ওজন কমেছে এবং বিজ্ঞানীরা বলছেন এই ট্রায়ালের ফলাফল থেকে তারা মনে করছেন, স্থূলতার চিকিৎসায় এই ওষুধ একটা ‘নতুন যুগের’ সূচনা করবে।
ট্রায়ালে অংশ নেয়া ব্রিটেনের কেন্ট অঞ্চলের জ্যান এই পরীক্ষায় ২৮ কেজি ওজন কমিয়েছেন যা তার শরীরের ওজনের পাঁচ ভাগের এক ভাগ।
“এই ওষুধ আমার জীবন বদলে দিয়েছে এবং খাবারের প্রতি আমার দৃষ্টিভঙ্গিও পুরো বদলে গেছে,” তিনি বলছেন।
তিনি বলেন, আগে তিনি ডায়েট করে অর্থাৎ খাওয়া কমিয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেছিলেন, যা ছিল “খুবই কষ্টকর”, কিন্তু এই ওষুধ নেয়ার অভিজ্ঞতা একদম আলাদা, কারণ এই ওষুধ নেবার পর তার ক্ষুধা পেত কম।
‘কষ্টকর ছিল না’
ট্রায়াল শেষ হবার পর জ্যানের আগের মত আবার খিদে বেড়ে গেছে এবং আবার তার ওজন বাড়ছে।
তিনি বলছেন: “ট্রায়ালের সময় ওজন কমানোর ব্যাপারটা মোটেও কষ্টকর ছিল না, এখন আবার ক্ষুধার সাথে সর্বক্ষণ লড়াই করতে হচ্ছে।”
যারা টাইপ-টু ডায়বেটিসের জন্য চিকিৎসা নেন তাদের অনেকের কাছেই সেমাগ্লুটাইড একটি পরিচিত নাম। কিন্তু ওজন কমানোর এই ট্রায়ালে এই ওষুধ প্রয়োগ করা হয়েছে আরও বেশি ডোজে।
এই ওষুধ কাজ করে শরীরে ক্ষুধার প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করার মাধ্যমে। পেট ভরে খাবার পর শরীরের ভেতর জিএলপি১ নামে যে হরমোন নিঃসরণ হয়, এই ওষুধ ঠিক সেই হরমোনের অনুভূতি শরীরে তৈরি করে। ফলে সবসময়ই মনে হয় পেট ভরা আছে।
ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে কয়েকজনকে এই ওষুধ দেয়া হয় এবং কয়েকজনকে ওষুধ নেই এমন তরল পদার্থের ইঞ্জেকশান দেয়া হয়। এদের সবাইকেই খাবার ও জীবনযাপন বদলানোর ব্যাপারে একই পরামর্শ দেয়া হয়।
নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিন নামে এক সাময়িকীতে ট্রায়ালের ফলাফল প্রকাশ করা হয়, যাতে দেখা যায় সেমাগ্লুটাইড ওষুধ নেয়া ব্যক্তিদের ওজন কমেছে গড়ে ১৫ কেজি। আর যাদের ওষুধ দেয়া হয়নি, তাদের ওজন কমেছে গড়ে ২.৬ কেজি।
আরও পড়ুনঃ করোনা সংশ্লিষ্ট বিরল ও বিপদজনক উপসর্গে আক্রান্ত বিশ্বের বেশ কিছু শিশু
ওষুধ যাদের দেয়া হয়েছে তাদের ৩২% পাঁচ ভাগের এক ভাগ ওজন ঝরিয়ে ফেলতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু ভুয়া ওষুধ যাদের দেয়া হয়েছে তাদের ২ শতাংশেরও কম ব্যক্তির ওজনে কোনই হেরফের হয়নি।
তিনি বলছেন: “ট্রায়ালের সময় ওজন কমানোর ব্যাপারটা মোটেও কষ্টকর ছিল না, এখন আবার ক্ষুধার সাথে সর্বক্ষণ লড়াই করতে হচ্ছে।”
যারা টাইপ-টু ডায়বেটিসের জন্য চিকিৎসা নেন তাদের অনেকের কাছেই সেমাগ্লুটাইড একটি পরিচিত নাম। কিন্তু ওজন কমানোর এই ট্রায়ালে এই ওষুধ প্রয়োগ করা হয়েছে আরও বেশি ডোজে।
এই ওষুধ কাজ করে শরীরে ক্ষুধার প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করার মাধ্যমে। পেট ভরে খাবার পর শরীরের ভেতর জিএলপি১ নামে যে হরমোন নিঃসরণ হয়, এই ওষুধ ঠিক সেই হরমোনের অনুভূতি শরীরে তৈরি করে। ফলে সবসময়ই মনে হয় পেট ভরা আছে।
ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে কয়েকজনকে এই ওষুধ দেয়া হয় এবং কয়েকজনকে ওষুধ নেই এমন তরল পদার্থের ইঞ্জেকশান দেয়া হয়। এদের সবাইকেই খাবার ও জীবনযাপন বদলানোর ব্যাপারে একই পরামর্শ দেয়া হয়।
নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিন নামে এক সাময়িকীতে ট্রায়ালের ফলাফল প্রকাশ করা হয়, যাতে দেখা যায় সেমাগ্লুটাইড ওষুধ নেয়া ব্যক্তিদের ওজন কমেছে গড়ে ১৫ কেজি। আর যাদের ওষুধ দেয়া হয়নি, তাদের ওজন কমেছে গড়ে ২.৬ কেজি।
ওষুধ যাদের দেয়া হয়েছে তাদের ৩২% পাঁচ ভাগের এক ভাগ ওজন ঝরিয়ে ফেলতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু ভুয়া ওষুধ যাদের দেয়া হয়েছে তাদের ২ শতাংশেরও কম ব্যক্তির ওজনে কোনই হেরফের হয়নি।
অধ্যাপক ব্যাটারহাম বলছেন, এই ওষুধ প্রাথমিক পর্যায়ে শুধু স্থূলতার চিকিৎসা বিষয়ক বিশেষ ক্লিনিকগুলোতে ব্যবহারের জন্য অনুমোদন করা হবে। ঢালাওভাবে ব্যবহারের জন্য তা বাজারে ছাড়া হবে না।
তিনি বলছেন, এর কারণ এর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার সম্ভাবনা আছে, যেমন বমিভাব, ডায়রিয়া, বমি হওয়া এবং কোষ্ঠকাঠিন্য। এছাড়াও তারা পাঁচ বছর ব্যাপী একটি গবেষণা চালাবেন দেখার জন্য যে এই ওষুধ ব্যবহার করে ওজন কমানোর ব্যাপারটা দীর্ঘ মেয়াদে স্থায়ী হবে কিনা।
কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন বিজ্ঞানী অধ্যাপক সার স্টিফেন ও’রাহিলি বলছেন: “এই ওষুধ ব্যবহার করে যে পরিমাণ ওজন কমানো সম্ভব হয়েছে, তা স্থূলতা কমানোর জন্য লাইসেন্স প্রাপ্ত বর্তমান যে কোন ওষুধের থেকে বেশি কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে।
স্থূলতার চিকিৎসার জন্য ভবিষ্যতে ওষুধ আবিষ্কারের ক্ষেত্রে সেমাগ্লুটাইড একটা নতুন দিগন্ত খুলে দিতে যাচ্ছে। বিজ্ঞানীরা এখন ওজন কমাতে একইধরনের এমন ওষুধ আবিষ্কারে উদ্যোগী হতে পারবন যা সমানভাবে কাজ করবে, কিন্তু যাতে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকবে না।”
তবে পুষ্টিবিদ ড. ডুয়ান মেলর বলছেন, বিশাল ওজন যাদের জন্য বড় সমস্যা তাদের চিকিৎসার জন্য কার্যকর ওষুধ ব্যবহারের সুযোগ অবশ্যই সুখবর।
“কিন্তু পাশাপাশি এটাও মনে রাখতে হবে যে, আমাদের জীবনযাপনের ধারা এবং খাদ্যাভ্যাস ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে ওষুধ এবং জীবনযাপনের ধারা বদলানোর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া এবং ঝুঁকিও যে থাকে সেটাও মাথায় রাখা দরকার। আর তাই স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া নিজে নিজে ওজন কমানোর চিকিৎসা শুরু করাটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।”
Visit Our Facebook Page : Durdurantonews
Follow Our Twitter Account : Durdurantonews